![]() |
নিবু মিয়াকে হত্যার ঘটনায় ছেলেসহ গ্রেফতার ৩ জন |
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেন ছেলে। হত্যার সময় ছেলে সোহেল মিয়া ধানক্ষেতে বাবার মাথা চেপে ধরেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।
এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নিহত নিবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (২৪)। তার তিন বন্ধু ইলেকট্রিশিয়ান বাবুল মিয়া (৩২), কসাই নজরুল ইসলাম (৪৫) ও রাজমিস্ত্রি সুমন মিয়া (২৬)।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, গত ২০ অক্টোবর দুপুরে বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে হাত-পা বাঁধা ও গলাকাটা একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নিবু মিয়া (৬৫) বাজিতপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে। ওইদিনই নিহতের ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশের একটি দল প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বাজিতপুর উপজেলার দক্ষিণ পিরিজপুর বাজার এলাকার আ. হাই মেম্বারের হোটেল থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আসামি মো. বাবুল মিয়াকে আটক করে। আটক আসামি স্বীকারোক্তি দেন যে, নিবু মিয়ার সঙ্গে থাকা ৭০ হাজার টাকার জন্য তাকে খুন করেন তারা। তার দেওয়া তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নিহত নিবু মিয়ার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াসহ আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে বাবাকে গলা কেটে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন ছেলে সোহেল মিয়া।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এক বছর আগে নিহত নিবু মিয়া ২১ লাখ টাকায় জমি বিক্রি করেন। সেখান থেকে ৬ লাখ টাকা দিয়ে তার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াকে বিদেশে পাঠান। কিন্তু সোহেল বিদেশে থেকে ছয় মাস পর দেশে চেলে আসলে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। সংসার চালাতে এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পুরাতন অটোরিকশা কিনেন সোহেল। কিন্তু সোহেল তার বাবার কাছে জমি বিক্রির আরও যে টাকা ছিলো তা দেওয়ার জন্য বলেন। ওই টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। তাই নিবু মিয়া টাকাগুলো তার সঙ্গে সঙ্গে রাখতেন। ঘটনার দিন তার বাবার কাছ থেকে টাকাগুলো নেয়ার জন্যই তিনি তার বন্ধুদের নিয়ে বাবা নিবু মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করেন।
পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গ্রেফতারকৃত বাবুল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং টাকার জন্য নিবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া তাদেরকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলেও জবানবন্দিতে জানান বাবুল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আল আমিন হোসাইন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বাজিতপুর সার্কেল) সত্যজিৎ কুমার ঘোষ প্রমুখ
0 Comments