বিপ*র্যস্ত পশ্চিমাঞ্চল রেল সেবা, বন্ধ ৪৮ ট্রেন ও ৭১ স্টেশন

ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ




তীব্র জনবল সংকটে বিপর্যস্ত পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সেবা। এরইমধ্যে মোট ২৬৪টি অপারেটিং স্টেশনের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ৭১টি। বন্ধ হয়ে গেছে ৪৮টি ট্রেন চলাচল। অনেক রেলপথে সক্ষমতার তুলনায় বেশি ট্রেন চলছে। নানা সংকটে সংকুচিত হচ্ছে সেবা, দুর্ভোগও চরমে।


পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, পশ্চিমাঞ্চলের ৯৭৫ জন স্টেশন মাস্টারের বিপরীতে শূন্য ৬২৩টি পদ। এমনকি, ৪২ জন গার্ড, ৪১৫ জন পয়েন্টসম্যান ও ৪৯১ জন গেট কিপারের পদেও নেই কোনো জনবল। সবমিলিয়ে মোট জনবলের ৫৬ শতাংশই শূন্য। লোকবল সংকটে পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী বিভাগের ৫৪টি পুরোপুরি ও ৫টি স্টেশন আংশিক বন্ধ হয়ে গেছে। আর লালমনিরহাট বিভাগের বিভিন্ন রুটে বন্ধ ১২টি স্টেশন। বন্ধ থাকা স্টেশনে থামে না কোনো আন্তঃনগর ট্রেন। কিছু লোকাল ট্রেন থামলেও নেই টিকিট কাটার ব্যবস্থা।



এ অঞ্চলে গত ১৫ বছরে ৬৮টি নতুন ট্রেন চালু হয়। ৩৮টি ট্রেনের রুট বর্ধিত ও পরিবর্তন করা হয়। ২০২৩ ও ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী, বন্ধন, মিতালী এক্সপ্রেসসহ ২০টি ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে। যাত্রীখাতে আয় কম, কোচ, ইঞ্জিন, ক্রুর অভাব এবং ডেমু ট্রেন নষ্ট হওয়ায় বর্তমানে পাকশী ও লালমনিরহাট বিভাগে বন্ধ হয়েছে ৪৮টি ট্রেন।



অন্যদিকে, ঈশ্বরদী-জয়দেবপুর রুটে ২৩টির স্বক্ষমতা থাকলেও চলাচল করছে ৪০টি ট্রেন। আর ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর রুটে ২২টির সক্ষমতায় বিপরীতে চলাচল করছে ৩৬টি ট্রেন। সবমিলিয়ে বেড়েছে যাত্রী ভোগান্তি।



রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মামুনুল ইসলাম বলেন, লোকবল সংকট সবচেয়ে বড় সমস্যা। জনবল নিয়োগ হলেও চাকরি পাওয়ার পর শতকরা ৪০ ভাগ রেলকর্মী ইস্তফা দিয়ে চলে যান। কারণ এখানে সুযোগ সুবিধা অন্যান্য চাকরির থেকে কম। একারণেই সংকট নিয়ে আমরা ট্রেন সুষ্ঠুভাবে চালানোর চেষ্টা করছি। সংকট কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।



অব্যবস্থাপনা এবং বগি ও আসন সংকট নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই যাত্রীদের। রেলপথ কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, পরিকল্পনার অভাবে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে স্টেশন সংলগ্ন লেভেল ক্রসিংগুলো।



এদিকে, রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর রেলগেট এলাকায় অবস্থিত রেলভবনে রেলওয়ে সেবার সংকট দূরকরণের জন্য স্মারকলিপি দিয়েছে রাজশাহী সংগ্রাম পরিষদের নেতারা। 



তারা জানান, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ইতোপূর্বে রাজশাহী থেকে পার্বতীপুর রুটে চলাচল করতো। শিক্ষার্থীসহ অনেক অসুস্থ মানুষ এই ট্রেনের উপকারভোগী ছিলেন। তবে অজ্ঞাত কারণে ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বিপাকে পড়েন এ রুটে চলাচলকারী সব শ্রেণি-পেশার যাত্রীরা। এ অবস্থায় পরিবর্তিত এই পেক্ষাপটে ট্রেনটি নতুনভাবে চালুর দাবি জানান তারা। 



এদিকে, স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিয়ে মহাব্যবস্থাপক মামুনুল ইসলাম বলেন, ট্রেন চালুর ব্যাপারে তারা যে স্মারকলিপি দিলেন, সেই অনুযায়ী আমি পদক্ষেপ নেব।



এছাড়াও রাজশাহী থেকে পাবর্তীপুর রুটে চলাচলকারী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।



রোববার (১৭ নভেম্বর) ১১টার দিকে রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান কার্যালয়ে মহাব্যবস্থাপকের মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি দাখিল করা হয়। 

Post a Comment

0 Comments